প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস হ্রাস করল এডিবি, ৬.৬ থেকে কমিয়ে ৫.১%
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৩০ পিএম | আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৩০ পিএম
চলতি অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। প্রবৃদ্ধি কমলেও মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে বলে তাদের পূর্বাভাস। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৫ দশমিক ১ শতাংশে নামিয়ে এনেছে এডিবি। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সংস্থাটি তাদের এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক সেপ্টেম্বর সংস্করণ প্রকাশ করেছে। এর আগে গত এপ্রিলের পূর্বাভাসে তারা বলেছিল, প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৬ শতাংশ হবে। অর্থাৎ এক ধাপে প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ১ দশমিক ৫ শতাংশীয় পয়েন্ট কমিয়েছে এডিবি। গত এপ্রিলে এডিবি বলেছিল, চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নেমে আসবে। কিন্তু এখন এডিবি বলছে, তা হবে না। বরং মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশে উন্নীত হবে। এর মানে, এ বছরও দেশের সাধারণ মানুষকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির জন্য চড়া মূল্য দিতে হবে।
গত জুলাই ও আগস্ট মাসে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অর্থনৈতিক কার্যক্রম বিঘিœত হয়েছে। তার সঙ্গে সাম্প্রতিক বন্যার প্রভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছে এডিবি। এই দুই প্রভাবে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির গতি কমবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।
রাজস্ব ও আর্থিক নীতিতে কঠোরতা আছে, তা অব্যাহত থাকবে বলে এডিবির ধারণা। এ ছাড়া ক্রয় ও বিনিয়োগ আরও কমবে। নেতিবাচক ঝুঁকি থাকায় সামষ্টিক অর্থনীতির পূর্বাভাস অত্যন্ত অনিশ্চিত। চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, ভঙ্গুর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও আর্থিক খাতের দুর্বলতা হলো এসব ঝুঁকির উৎস।
এডিবির পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈশ্বিক অর্থনীতির ধীরগতি ও অন্যান্য সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কারণে চাহিদা কমবে। পণ্য ও জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়া এবং টাকার অবমূল্যায়ন হওয়ায় মূল্যস্ফীতির হার বাড়তি। তবে আমদানি-রফতানি কমে যাওয়ায় চলতি হিসাবের ঘাটতি কমেছে বলেও জানিয়েছে এডিবি। সংস্থাটির পূর্বাভাস, মূল্যস্ফীতির হার আবার দুই অঙ্কের ঘরে উঠতে পারে।
রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি, সুদ ও টাকার বিনিময় হার যথাযথ নীতির মাধ্যমে স্থিতিশীল করা এবং অর্থনৈতিক সংস্কারের ওপর সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নির্ভর করবে বলে মনে করছে এডিবি।
ধারাবাহিক উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক হিসাবের ওপর চাপ, আমদানি নিয়ন্ত্রণ ও বেসরকারি বিনিয়োগের ধীরগতির কারণে গত দুই অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ শতাংশের নিচে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ; ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ছিল ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ।
শেখ হাসিনা সরকারের পূর্বাভাস ছিল, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। চলমান চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থনীতিবিদেরা একে ‘উচ্চাভিলাষী’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
গত সরকারের আমলে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছে যায়। তৎকালীন রাজনৈতিক নেতৃত্ব এই উচ্চ প্রবৃদ্ধিকে অর্থনীতিতে বড় সাফল্য হিসেবে দেখিয়েছে। কিন্তু করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রবৃদ্ধি কমতে থাকে। অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকের বেহাল দশা শুরু হয়। অর্থনীতিবিদেরা তৎকালীন সরকারের দেখানো পরিসংখ্যানের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।
মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি
দুই বছর ধরে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজমান। সাধারণ সীমিত আয়ের মানুষকে চড়া দামে বাজার থেকে পণ্য কিনতে হচ্ছে, যা তাঁদের কষ্ট বাড়িয়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের ঘর ছাড়িয়ে যায়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, জুলাই মাসে দেশে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যা গত এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ। আগস্ট মাসে দেশের মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমেছে। তবু এখনো মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে আছে। খাদ্যের মূল্যস্ফীতি সাড়ে ১১ শতাংশের মতো আছে।
এ ছাড়া গত জুন পর্যন্ত আগের এক বছরের প্রতি মাসেই মূল্যস্ফীতির হার সাড়ে ৯ শতাংশের আশপাশে ছিল।
উচ্চ মূল্যস্ফীতি এখন অর্থনীতির অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। এক বছর ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে আছে। মূল্যস্ফীতি একধরনের করের মতো, যা ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার ওপর চাপ বাড়ায়।
আয় বৃদ্ধির তুলনায় মূল্যস্ফীতি বেশি বেড়ে গেলে গরিব ও মধ্যবিত্তের সংসার চালাতে ভোগান্তি বাড়ে। এমনিতেই বাজারের জিনিসপত্রের দাম বেশ চড়া। তার সঙ্গে চিকিৎসা, পরিবহনসহ খাদ্যবহির্ভূত খাতেও খরচ বেড়ে গেছে। সব মিলিয়ে মূল্যস্ফীতির এ চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ।
বিভাগ : অর্থনীতি
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
২১ দিনের যুদ্ধবিরতি চায় যুক্তরাষ্ট্র-ইইউসহ ১১ দেশ
পশ্চিমাদের উদ্বেগ বাড়িয়ে পরমাণু নীতিতে বদল আনছে রাশিয়া
প্রধান বিচারপতির সঙ্গে মাসদার হোসেনের সাক্ষাত
দেশে শতভাগ নবায়যোগ্য জ্বালানির ব্যবহার নিশ্চিত করার দাবি
গণমানুষের কল্যাণই জামায়াতের রাজনীতির আদর্শ : শফিকুর রহমান
সাবেক প্রক্টর গোলাম রাব্বানী, জয় লেখক রাব্বানী সাদ্দামসহ ছাত্রলীগের ৬৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
তরুণরাই নতুন বাংলাদেশ গড়বে: ড. ইউনূস
সোনালি ব্যাগের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত কেন?
ফ্যাসিবাদের ধারক-বাহক মিডিয়া সংস্কার করা জরুরি
জাতিসংঘে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন তুলে ধরছেন ড. ইউনূস
ভারতে ধর্মীয় উৎসবের সময় পানিতে ডুবে ৪৬ জনের সলিল সমাধি
মহারাষ্ট্রের হিন্দু পুরোহিত রামগিরি মহারাজ ও বিজেপির নিতেশ রানেকে গ্রেফতার দাবীতে সিলেটে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
দুর্বল ব্যাংকগুলো ধার পাচ্ছে সাড়ে ১৯ হাজার কোটি টাকা
জাবিতে সপ্তাহব্যাপী নাট্যপার্বণ শুরু শনিবার
সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে জাবিতে মানববন্ধন
পবিপ্রবিতে নবনিযুক্ত ভাইস-চ্যান্সেলর ড. কাজী রফিকুল ইসলাম
গোলাপগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
মধ্যপ্রাচ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধের হুঁশিয়ারি বাইডেনের
প্রথমবার তাইওয়ান প্রণালীতে জাপানের যুদ্ধজাহাজ
চীনে রাশিয়ার গোপন যুদ্ধ ড্রোন প্রকল্প চালু